জনাব মুজাহিদুল ইসলাম এর স্বপ্নভঙ্গ ও পুণরায় ঘুরে দাড়ানোর গল্প

মেসার্স তাক্বওয়া কংক্রিট ট্রেডার্স ও বিল্ডার্স এর মালিক জনাব এস. এম. মুজাহিদুল ইসলাম, বয়স ৩১ বছর, শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচএসসি; তিনি ২০১৯ সাল থেকে বিশ্বরোড চেয়ারম্যানের মোড়, মূলঘর, ফকিরহাট, বাগেরহাটে হলোব্লক, সলিড ব্লকসহ কনস্ট্রাকশনের মালামাল প্রস্তুত ও বিক্রয় করছেন। পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৬ জন। প্রকল্পের শুরুর দিকে জনাব মুজাহিদুল ইসলাম প্রচুর পরিমাণে ব্লক তৈরি এবং বিক্রয় করছিলেন, এমনকি মেশিন ছোট হওয়ার কারণে সে সময়ে বাজারের চাহিদাও পূরণ সম্ভব হচ্ছিল না, তিনি কোডেক এসইপি প্রকল্পের সবচেয়ে বড় উদ্যোক্তা ছিলেন। অন্যান্য উদ্যোক্তাদের তিনি নির্দেশনা ও পরামর্শ প্রদান করতেন। সেই সময় বাজার চাহিদা অনেক বেশি থাকায় তিনি কোডেক ক্ষুদ্র ঋণ কার‌্যক্রম থেকে ২০০০০০ টাকা ঋণ নিয়ে তার সেমি অটোমেটিক মেশিনকে উন্নত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তার চলমান মেশিন এবং আরো কিছু সরঞ্জাম ক্রয় করে একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন হাইড্রোলিক মেশিন বানানোর চেষ্টা করছিলেন। ইউটিউব দেখে ও তার দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে সকল কাঁচামাল ঢাকা থেকে সংগ্রহ করে কোনো দক্ষ মিস্ত্রী ছাড়া নিজেই মেশিনটি তৈরি করেন। মুজাহিদুল ইসলামের ধারণা অনুযায়ী পূর্বের মেশিনের তুলনায় নতুন মেশিনটি কয়েক গুণ বেশি ক্ষমতা সম্পন্ন হবে এবং সেই অনুযায়ী অধিক পরিমাণ প্রোডাকশন করতে পারবে। দুর্ভাগ্যক্রমে বাস্তবিক কোন কারিগরি জ্ঞান না থাকায় তিনি নতুন মেশিনটি সঠিকভাবে প্রস্তুত করতে পারেননি। যেহেতু পুরাতন মেশিনের অনেক যন্ত্রাংশ মিলিয়ে তিনি এই মেশিনটি তৈরি করেছেন তাই পুরাতন মেশিনটিও এখন ব্যবহার উপযোগী নেই। এক কথায় বলতে গেলে নতুন এবং পুরাতন দুইটা মেশিন এখন অচল আর জনাব মুজাহিদুল ইসলামের কাছে অতিরিক্ত টাকাও নাই যা দিয়ে তিনি পুনরায় আর একটা মেশিন স্থাপন করবেন। এমতাবস্থায় তার ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। কিন্তু প্রচুর ইচ্ছা শক্তি ও মনোবল থাকায় তিনি তখন দক্ষিণ কোরিয়ায় ফিরে যান এবং এই ব্যবসার ভার অর্পণ করেন তার পিতা- মনিরুল ইসলামের কাছে। জনাব মনিরুল ইসলাম পুনরায় ব্লক ব্যবসা দাঁড় করানোর চেষ্টা করেন এবং বর্তমানে হাইড্রোলিক মেশিন দ্বারা ব্লক এবং পার্কিং টাইলস তৈরি করছেন। বর্তমানে তিনি ৫০০০০ টাকার বেশি মাসে আয় করছেন। কোডেক এসইপি প্রকল্প তাকে সব ধরনের কারিগরি সহযোগিতা ও পরামর্শ প্রদানের পাশাপাশি মডেল উদ্যোক্তা হিসাবে বিবেচনা করে নতুন ভাবে ব্যবসা শুরু করতে মেশিনারিজ ক্রয়ে আর্থিক অনুদান প্রদান করেছে। তিনি বলেন কোডেক-এসইপি প্রকল্পের সহযোগিতা ও পরামর্শ ছাড়া এতো দ্রুত আমার পক্ষে ঘুরে দাড়ানো সম্ভব হতো না।